Saturday, April 14, 2012
Happy Bangla New Year1419 ‘মুছে যাক গ্লানি ঘুচে যাক জরা/অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা।’
Bangladeshis are celebrating the Bengali new year 1419 amid fanfare, festivity and gaiety on Saturday, the first day of Boishakh.
People from broad spectrum of society started to assemble in their droves at Ramna Park, the prime venue of the festival, from early in the morning.
The celebration began with Pohela Boishakh's central attraction, Chhayanat's cultural programme at 6:15am at Ramna Batamul in the capital, which is not only the heart of the celebration but also a symbol of protest against oppression.
The artists sung Raga Bhairab at the beginning and then Rabindra Sangeet – Purbo Gogon Bhage.
They presented other songs of Rabindranath Tagore, national poet Kazi Nazrul Islam, Atul Prasad Sen, Rajanikanta Sen, Shah Abdul Karim, Lalon Shah, Torab Ali Shah, Gyan Prokash Ghosh and others. আজ পহেলা বৈশাখ। আজ নববর্ষ। স্বাগত ১৪১৯। বাংলাদেশের নিজস্ব সংস্কৃতি ও গর্বিত ঐতিহ্যের রূপময় ছটায় উদ্ভাসিত সর্বজনীন উত্সবের দিন আজ। আনন্দ-হিল্লোল, উচ্ছ্বাস-উষ্ণতায় দেশবাসী আবাহন করবে নতুন বছরকে। অর্থ-সঙ্গতি থাকুক আর না-ই থাকুক, সবার হৃদয়ে আজ রবীন্দ্র-নজরুলের সুর জেগে উঠবে—‘এসো হে বৈশাখ, এসো এসো...,’ কিংবা ‘...ঐ নতুনের কেতন ওড়ে কালবোশেখী ঝড়, তোরা সব জয়ধ্বনি কর।’
আজ বৈশাখী উত্সব। এক অমলিন আনন্দের দিন। আজ এক প্রেরণার দিনও। ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষ এক অভিন্ন হৃদয়াবেগ নিয়ে মিলিত হবে একই উপলক্ষে।
বাংলা নববর্ষের শুভ এই দিনটি এবার উদযাপন করা হচ্ছে এমন এক পরিবেশে, যখন দেশের মানুষ দারুণ অর্থনৈতিক কষ্টে রয়েছে। শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির কারণে লাখ লাখ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী পুঁজি হারিয়ে হাহুতাশ
করছে। মন্ত্রীদের ঘুষ-দুর্নীতি দেশের সম্মান ধূলিসাত্ করে দিয়েছে। একইসঙ্গে নাগরিক দুর্ভোগে মানুষের জীবন দুর্বিষহ। গ্যাস নেই, পানি নেই, বিদ্যুত্ নেই। পদে পদে লঙ্ঘিত হচ্ছে মানবাধিকার। গুম ও গুপ্ত হত্যা, দ্রব্যমূল্যের ছোবল, চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ জনজীবন। এই অস্বস্তি, নানা ঝড়ঝঞ্ঝা এবং প্রতিকূলতা সত্ত্বেও নতুন স্বপ্নের আবির ছড়ানো নববর্ষকে স্বাগত। বাংলা নববর্ষের শুভ এই দিনটি জনজোয়ারে প্রাণময় উত্সবে উদ্ভাসিত, হিল্লোলিত। যার যার সাধ্যমত আনন্দ আয়োজনে উজ্জ্বল, অন্যরকম একটা দিন। নতুন এই দিনটি পুরনো সব ব্যর্থতা গ্লানি বঞ্চনা দুঃখকষ্ট ও আবর্জনার জঞ্জাল সরিয়ে নতুন আশা, কর্মোদ্দীপনা, স্বপ্ন, প্রত্যয় ও প্রাণশক্তিতে উজ্জীবিত হওয়ার ডাক দিচ্ছে। নতুনের কেতন ওড়ানো বৈশাখ এসেছে নতুন সম্ভাবনা, প্রত্যাশা ও সমৃদ্ধি অর্জনের লড়াইয়ে জয়লাভের প্রতিশ্রুতি এবং প্রেরণা নিয়ে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে নতুন বছরের কাছে মানুষের প্রত্যাশা—শোনাও নতুন গান। ১৪১৯ হোক শান্তির বছর, দুর্নীতির বিরুদ্ধে মানুষের জেগে ওঠা ও দুর্নীতিকে প্রতিরোধের বছর, মানবাধিকার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষার বছর। ‘ব্যর্থ প্রাণের আবর্জনা’ পুড়িয়ে ফেলে, হতাশা-অবসাদ-ক্লেদ ঝেড়ে-মুছে ফেলে নতুন উদ্দীপনায় জাগরণের আহ্বান জানাচ্ছে বৈশাখ। হিংসা-দ্বেষ, ক্ষুদ্রতা, কলুষ, কুসংস্কার এবং পশ্চাত্পদতার নিগড় ভেঙে ফেলে, অসুন্দরকে হটিয়ে সমাজ মুক্ত হোক, সত্যিকার গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরে আসুক, প্রগতির আলোয় স্নিগ্ধ প্রশান্ত হোক সমাজ—এ আহ্বান জানাচ্ছে বৈশাখ। ‘যাক পুরাতন স্মৃতি, যাক ভুলে যাওয়া গীতি/অশ্রুবাষ্প সুদূরে মিলাক—এসো হে বৈশাখ।’
আজ ভোরে দিগন্তের তিমিরে সূর্যোদয়ের প্রথম রশ্মি বিচ্ছুরিত হয়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই সূচিত হবে বাংলা নববর্ষের জন্মক্ষণ। তখন থেকেই বৈশাখের সর্বজনীন উত্সব-আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে উঠতে দেখা যাবে সারাদেশ, সব বয়সের মানুষকে। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে নানা বয়সী মানুষ সাড়ম্বরে উত্সবের আনন্দে মেতে উঠবে। পোশাক-পরিচ্ছদ, খাওয়া-দাওয়া, গানবাদ্য— সবকিছুতেই প্রাধান্য পাবে বাঙালিয়ানা। আড্ডা, আমন্ত্রণ, উচ্ছ্বাসে কেটে যাবে দিনটি। শহরের রাস্তা ও উদ্যানে নামবে মানুষের ঢল। শুধু তা-ই নয়, শহর-নগর, গ্রাম-গ্রামান্তর সর্বত্রই বইবে বর্ষবরণের প্রাণোচ্ছল উত্সব-তরঙ্গ। পীড়াদায়ক তাপদাহ তুচ্ছ করে, অস্বস্তি উপেক্ষা করে ভোর থেকে দুপুর-বিকাল-সন্ধ্যা-গভীর রাত পর্যন্ত আজ চলবে বৈশাখবরণ। দেখা যাবে কোথাও গান বাজছে, কোথাও মেলা বসেছে। কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে ঢাকের শব্দ, ঢোল, বাঁশি, নাগরদোলার শব্দ, পায়ে পায়ে উত্থিত ধূলিপুঞ্জের মধ্যে মানুষের গুঞ্জরণ-ধ্বনি, নাগরদোলায় ঘূর্ণনের সঙ্গে সঙ্গে ভয়জাগানো কিছু শব্দ, শিশুর কলরব, উচ্ছ্বাস। বৈশাখী মেলায় রকমারি সম্ভার—চুড়ি, কানের দুল, সুগন্ধি সাবান, হাওয়াই মিঠাই, চুলের ফিতা, নেইল পলিশ, রঙিন বেলুন, কাঠের পুতুল, মাটির পুতুল, আম কাটার চাকু, জিলাপি, খৈ-বাতাসা, ঘরগেরস্থির দরকারি বস্তু... আরও কত কি!
আজ পহেলা বৈশাখ সরকারি ছুটির দিন। সংবাদপত্র অফিসও আজ বন্ধ থাকছে। ভোরেই সূচিত হয়েছে বর্ণাঢ্য বৈশাখী অনুষ্ঠানমালা। সংবাদপত্রগুলো বের করেছে বিশেষ ক্রোড়পত্র। রেডিও-টিভিতে গত রাত থেকেই প্রচারিত হচ্ছে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা।
মোগল সম্রাট আকবরের নির্দেশে তার সভাসদ আমীর ফতেহউল্লাহ খান সিরাজী প্রায় চারশ’ বছর আগে হিজরি সনের সঙ্গে মিল রেখে ফসলি সন হিসেবে বাংলা সন বা বঙ্গাব্দের প্রচলন ঘটিয়েছিলেন। শস্যভিত্তিক ঋতুকে সামনে রেখে কৃষকের কাছ থেকে খাজনা আদায়ের সুবিধার্থে প্রচলন করা হয়েছিল বাংলা সনের। তখনই বঙ্গাব্দের সূচনা হয় বৈশাখের প্রথমদিন থেকে। সেই থেকে আজ পর্যন্ত তা এই জনপদের মানুষের গর্বিত ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃত। বৈশাখী উত্সব সংস্কৃতির অন্যতম সমৃদ্ধ এক উপাদানে পরিণত হয়েছে। বাংলা নববর্ষে হালখাতাই মুখ্য ছিল এককালে। তার সঙ্গে কিছু উত্সব ছিল, ছিল কিছু আনন্দসম্ভার। এখনও হালখাতা আছে। ক্রমেই মুখ্য হয়ে উঠছে আনন্দ-উত্সব। নাচ, গান, মেলা, নতুন হালখাতা, মিষ্টিমুখ, মঙ্গল শোভাযাত্রা, নতুন পাঞ্জাবি, শাড়ি, ফতুয়া কেনার ধুম, খাওয়া-দাওয়া, বেড়ানো, শুভ নববর্ষ জানানোর রেওয়াজ—উত্সবের নানা অনুষঙ্গে নববর্ষ উদযাপন নিত্যনতুন মাত্রিকতায় উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর হয়ে চলেছে। ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে ধনী-নির্ধন, শিক্ষিত-শিক্ষাবঞ্চিত—সব বয়সী মানুষের সর্বজনীন উত্সব হিসেবে উদযাপিত হয়ে আসছে এই পার্বণ। বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়াসহ রাজনৈতিক নেতারা বাণী দিয়েছেন।
বিভিন্ন সংগঠনের অনুষ্ঠানমালা
ছায়ানট : বাংলা নতুন বছর উদযাপনের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের প্রথমেই থাকে সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ছায়ানটের বর্ষবরণের আয়োজন। এবারও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। ঢাকার রমনা বটমূলে সকাল সোয়া ছয়টায় শুরু হবে বর্ষবরণের উত্সব। জীর্ণ পুরাতন পেছনে ফেলে এগিয়ে যাওয়ার উদ্দীপনার এ আয়োজনে এবার মিলেমিশে থাকছে প্রকৃতি, দেশ আর মাটির গন্ধ। ছায়ানটের সহ-সভাপতি ডা. সারওয়ার আলী জানান, ‘ভোর সোয়া ছয়টায় সুরের আলাপ দিয়ে শুরু হবে উত্সব। এতে পহেলা বৈশাখ ও ছায়ানটের এ আয়োজনের তাত্পর্য তুলে ধরে সূচনা বক্তব্য দেবেন সৈয়দ হাসান ইমাম। এরপর শুরু হবে মূল অনুষ্ঠান। এতে থাকবে রাগ আলাপ, একক ও দলীয় সঙ্গীত। থাকবে পঞ্চকবির গানসহ বাংলার মাঠ-ঘাটের লোকগানের একক, দলীয় ও পাঠভিত্তিক পরিবেশনা। এবার পোশাক হিসেবে ছোট মেয়েদের জন্য থাকছে কমলা রঙের শাড়ি ও নারীদের জন্য অফ-হোয়াইট রঙের শাড়ি। ছেলেদের জন্য থাকছে মেরুন রঙের পাঞ্জাবি ও সাদা পায়জামা। ছায়ানটের সভাপতি সানজিদা খাতুনের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শেষ হবে দু’ঘণ্টার অনুষ্ঠান। বিটিভি ও বেতার সরাসরি অনুষ্ঠান সম্প্রচার করবে। এ অনুষ্ঠান পঞ্চমবারের মতো স্পন্সর করছে গ্রামীণফোন। ১৯৬৭ সাল (মুক্তিযুদ্ধের বছর বাদে) থেকে শুরু হয়ে এখনও ধারাবাহিকভাবে এ উত্সবটি পালন করে আসছে ছায়ানট।
মঙ্গল শোভাযাত্রা : ছায়ানটের অনুষ্ঠানের মতোই নাগরিক বর্ষবরণের আরেকটি আয়োজন হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের মঙ্গল শোভাযাত্রা। এবারের বর্ষবরণ উত্সবে চারুকলার আয়োজনে বাংলাদেশের সমুদ্রজয় আর যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকে মূল থিম হিসেবে তুলে ধরা হবে। চারুকলার শিক্ষক চিত্রশিল্পী নিসার হোসেনের ড্রইংয়ে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে তৈরি হয়েছে প্রায় ৩৬ ফুটের লোকজধারার শিল্পকর্ম সাম্পান। চারুকলার আরেক শিক্ষক ও চিত্রশিল্পী শিশির ভট্টাচার্য্যের কনসেপ্টে শোভাযাত্রায় দুটি দৈত্যের শিল্পকর্ম। শোভাযাত্রার অগ্রভাগে আরও থাকবে একটি বাঘ, তিনটি ঘোড়া, একটি হাতি, তিনটি পাখির কম্পোজিশনের ভাস্কর্য। সুলতানি বাংলার বাদশাহী বহরের ঐতিহ্য ফুটিয়ে তুলতেই এ আয়োজন বলে জানান শিল্পী শিশির ভট্টাচার্য্য। এবারের শোভাযাত্রার আরেকটি আকর্ষণ হলো কিছু চাকচিক্যময় নিশান। এগুলো তৈরি করা হয়েছে সুলতানি আমলের ঐতিহ্য ধারণ করে। সুলতানি আমলের আভিজাত্য ও চাকচিক্য দেখাতে এসব নিশান তৈরি করা হতো। এসব মুখোশে ফুটে উঠেছে বাঘের মুখ, রাজা-রানী, উজির-নাজিরের মুখ, টেপা পুতুলের মুখ, পেঁচা, খরগোশ, ছোট পাখি, চশমা ইত্যাদি। এছাড়া সরা চিত্র, মুখোশ, টি-শার্টসহ বাহারি সব আয়োজন থাকছে বর্ণিল এ শোভাযাত্রায়। প্রতিকৃতি ও রঙ-বেরঙের মুখোশ নিয়ে চারুকলা অনুষদ প্রাঙ্গণ থেকে সকাল দশটায় এ শোভাযাত্রা বের হবে। হোটেল রূপসী বাংলা পর্যন্ত ঘুরে চারুকলার সামনে গিয়ে শোভাযাত্রাটি শেষ হবে। ১৯৮৯ সাল থেকে চারুকলার এ শোভাযাত্রার আয়োজন হচ্ছে।
বাংলা একাডেমী : নববর্ষ বরণ করে নিতে বাংলা একাডেমী এবং বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) যৌথ উদ্যোগে একাডেমী প্রাঙ্গণে পহেলা বৈশাখ থেকে ১০ বৈশাখ পর্যন্ত বৈশাখী মেলা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। এছাড়া আজ সকালে একাডেমীর নজরুল মঞ্চে বর্ষবরণ সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে শুরু হবে নববর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠান। আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের মধ্য দিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানাবে একাডেমী।
জাতীয় প্রেস ক্লাব : বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবও বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। এ আয়োজনে নতুন বছরকে নতুন আবাহনে, নতুন প্রাণের স্পন্দনে, কবিতার ছন্দে স্বাগত জানাবেন ক্লাব পরিবারের সদস্যরা। অনুষ্ঠানের শুরুতে সকাল আটটায় প্রেস ক্লাব সদস্য ও তাদের পরিবারের জন্য খৈ, মুড়ি-মুড়কি, বাতাসা ও পান্তা-ইলিশে প্রাতঃরাশের আয়োজন করা হয়েছে। এরপর সকাল দশটায় হবে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। প্রেস ক্লাব সদস্যদের ছেলেমেয়েদের গাওয়া ‘এসো হে বৈশাখ এসো এসো...’ গান দিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হবে। দেশের বরেণ্য শিল্পীরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করবেন। দুপুরে বিশেষ মধ্যাহ্নভোজ হবে দেশীয় খাবারে। বর্ষবরণ উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবকে দেশীয় সংস্কৃতিতে সাজানো হয়েছে। এছাড়া ছেলেমেয়েদের জন্য হাওয়াই মিঠাইয়ের ব্যবস্থা থাকবে।
আওয়ামী লীগ : বর্ষবরণ উপলক্ষে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্ক থেকে আজ সকাল সাড়ে সাতটায় এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করবে। এতে জাতীয় নেতারা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা অংশগ্রহণ করবেন। এছাড়া সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বৈশাখী মেলার আয়োজন করেছে দলটি।
বিএনপি : জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস) আজ বিকাল তিনটায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। এতে দলের সব পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত থাকবেন। তারা নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। অনুষ্ঠানে গান গেয়ে শোনাবেন দেশের খ্যাতিমান শিল্পীরা।
শিল্পকলা একাডেমী : বিকাল পাঁচটায় একাডেমীর জাতীয় নাট্যশালায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে থাকবে সঙ্গীত, নৃত্য, আবৃত্তি, কাব্যনাট্য, পটগান, বাউলগান ও বৈশাখী মেলা।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর : সকালে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে থাকছে নাচ ও বাউলগান।
সুরের ধারা : নতুন বছরকে বরণ করতে ‘হাজারও কণ্ঠে কোটি বাঙালির বর্ষবরণ’ শিরোনামে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে সুরের ধারা ও চ্যানেল আই। ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের এ অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন হাজারও কণ্ঠশিল্পী। অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ত্বাবধান করবেন রবীন্দ্রসঙ্গীতশিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা। অনুষ্ঠানে বরেণ্যশিল্পীদের মধ্যে অংশ নেবেন রুনা লায়লা, সাবিনা ইয়াসমিন, ফেরদৌস আরা, কনকচাঁপা, সৈয়দ আবদুল হাদী, কিরণ চন্দ্র রায়, রফিকুল আলম, ফরিদা পারভীন, আবিদা সুলতানা ও আইয়ুব বাচ্চু।
তারকা হোটেলের প্রস্তুতি : তারকা হোটেলগুলোতেও আছে বাংলা নতুন বছরকে বরণের নানা আয়োজন। প্যান-প্যাসিফিক হোটেল সোনারগাঁও, রূপসী বাংলা, ওয়াটার গার্ডেন, র্যাডিসন, ওয়েস্টিন, ঢাকা রিজেন্সি, সারিনা, পূর্বাণী, গ্রান্ড আজাদ, সুন্দরবন, খাজানা রেস্টুরেন্টসহ বিভিন্ন অভিজাত হোটেল ও রেস্তোরাঁয় পহেলা বৈশাখ উদযাপন হবে বিভিন্ন আয়োজনে। সেগুলোতে আজ থাকছে দেশীয় খাবারের বিশেষ ব্যবস্থা।
ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠী : গত কয়েক বছরের মতো এবারও শিশু পার্কের সামনে ভাসানী সড়কে পহেলা বৈশাখের সকাল থেকেই নানা আয়োজনে বর্ষবরণের প্রস্তুতি নিয়েছে ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠী। সকাল সাতটায় এ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন বরেণ্য শিল্পী মুস্তাফা মনোয়ার। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী প্রমোদ মানকিন। ভারতের কলাভারতী ব্যালেটের শিল্পীদের সঙ্গে দেশের খ্যাতিমান শিল্পীরা এতে সঙ্গীত পরিবেশন করবেন। অনুষ্ঠানে ঋষিজের ত্রিশ বছরের পথচলা উপলক্ষে গুণীজনদের সংবর্ধনা দেয়া হবে।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট : সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট প্রতিবারের মতো এবারও ধানমন্ডির রবীন্দ্রসরোবর মঞ্চে চৈত্রসংক্রান্তি ও পহেলা বৈশাখ উদযাপন করছে। আজকের আয়োজনে আছে একক ও দলীয় লোকসঙ্গীত, আবৃত্তি আর নৃত্যনাট্য ‘মহুয়ার পালা’।
জাতীয় জাদুঘর : বাংলাবর্ষ ১৪১৮ বিদায় ও বাংলাবর্ষ ১৪১৯ বরণ উপলক্ষে জাতীয় জাদুঘর ১১ থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত বৈশাখী পিঠা উত্সব ও কারুশিল্পমেলার আয়োজন করেছে। এর অংশ হিসেবে আজ বিকাল পাঁচটায় জাদুঘরের সামনের খোলা প্রাঙ্গণে আয়োজন করা হয়েছে বাউল সঙ্গীত, পদাবলী যাত্রা ‘সোনাই মাধব’ এবং ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। নববর্ষ উপলক্ষে আজ সকাল সাড়ে দশটা থেকে বিকাল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত জাদুঘরের গ্যালারি খোলা থাকবে।
লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন : বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মতো নববর্ষ বরণের নানা আয়োজন করেছে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন। আজ সকালে ফাউন্ডেশন থেকে বের হবে মঙ্গল শোভাযাত্রা। সকাল সাড়ে এগারোটায় বসবে বাউল গানের আসর। গান শোনাবেন আলম দেওয়ান ও তার দল, বীণা মজুমদার, রুবি সরকার প্রমুখ। বিকাল তিনটায় বাউল গানের আসরে গান করবেন আইনাল হক বাউল, ময়না সরকার প্রমুখ।
বেঙ্গল বৈশাখ উত্সব : বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের আয়োজনে শুক্রবার থেকে রাজধানীর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউর বনানী মাঠে দু’দিনের বৈশাখ-উত্সব শুরু হয়েছে। উত্সবের আজ শেষ দিন সকালে থাকবে ঢাকঢোল, স্বাগতিক গান, সরোদ বাদন, আবৃত্তি আর পঞ্চকবির গান। সন্ধ্যায় থাকবে গান, নাচ, বেহুলা-লখিন্দর পালা, সেতার বাদন। সন্ধ্যায় উত্সবের সমাপনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি থাকবেন জাতীয় সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। উত্সব প্রাঙ্গণে থাকবে কারুমেলা, ছবিমেলা, বাংলা গানের আসর, আবৃত্তি, পুতুলনাচ ইত্যাদি।
শান্ত মারিয়াম ফাউন্ডেশন : বাংলা ১৪১৮ সনকে বিদায় জানাতে আর ১৪১৯ সনকে বরণ করে নিতে শান্ত মারিয়াম ফাউন্ডেশন ও শান্ত মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজির যৌথ উদ্যোগে দু’দিনের বর্ণাঢ্য ও বৈচিত্র্যময় অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। আজ উত্তরার ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে সকাল নয়টায় শুরু হবে দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠান।
অন্যান্য আয়োজন : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন বছর বরণের আয়োজনের মধ্যে আছে সকাল সাতটায় গান, সকাল নয়টায় শোভাযাত্রা, সাড়ে এগারোটায় লাঠিখেলা, বিকাল সাড়ে তিনটায় নাচ ও গান, সন্ধ্যায় পদাবলী কীর্তন আর রাত আটটায় নাটকের মঞ্চায়ন। খেলাঘর ঢাকা মহানগর শিশুদের জন্য বৈশাখী উত্সবের আয়োজন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের আমতলায়। সেখানে থাকছে শিশুদের নাচ, গান, আবৃত্তি ও অভিনয়। মগবাজারের নজরুল একাডেমী বর্ষবরণ উপলক্ষে আজ বিকাল পাঁচটায় একাডেমী প্রাঙ্গণে আয়োজন করেছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। জাতীয় কবিতা পরিষদ বিকাল চারটায় পাবলিক লাইব্রেরীর উন্মুক্ত মঞ্চে কবিতা উত্সবের আয়োজন করেছে। গেণ্ডারিয়া কিশলয় কচি-কাঁচার মেলা নিজস্ব প্রাঙ্গণে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি নববর্ষ উপলক্ষে আজ থেকে দু’দিনের বৈশাখী মেলার আয়োজন করেছে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির মেলাপ্রাঙ্গণে। দনিয়া সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে শনিবার সকাল সাতটায় দনিয়ার বর্ণমালা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ সংলগ্ন প্রধান সড়কে পাঁচজন বংশীবাদক ও ঢোলকের ঢোলবাদন এবং বংশীবাদন দিয়ে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের শুরু হবে। সমবেত সঙ্গীতের মাধ্যমে বৈশাখকে বরণ করবে দনিয়া সাংস্কৃতিক জোটের শিল্পীরা। সকাল নয়টায় বর্ণমালা কলেজের গেট থেকে বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হবে। দনিয়ার বিভিন্ন অলিগলি প্রদক্ষিণ করে কলেজের গেটে গিয়ে শেষ হবে শোভাযাত্রা। বিকাল চারটা থেকে আবারও শুরু হবে একক ও দলীয় লোকসঙ্গীত, আবৃত্তি, নৃত্যানুষ্ঠান ও পথনাটক।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment